নিজস্ব প্রতিবেদক :
গত মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন সারা বাংলাদেশের ৬৪ জেলার ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ীগণ। মানববন্ধনে ব্যবসায়ীরা ওয়াল্টন ও মার্সেল কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ওয়াল্টন ও মার্সেল দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ ও ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করলেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করেনি। এমনকি নেওয়া অর্থও ফেরত দেয়নি।
ব্যবসায়ীরা জানান, ২০১৯ সালে কোম্পানি ২০ লাখ পিস ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মিথ্যা কমিশনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডিলারদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করেন। ওয়ালটন ৩৫-৪০% এবং মার্সেল ৪০-৪৫% কমিশন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও, প্রকৃতপক্ষে ২০-২৪% কমিশন দেওয়া হয়েছে। বাকিটা পরবর্তীতে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও আজ অবধি তা বাস্তবায়ন হয়নি।
এছাড়া, ব্যবসায়ীদের অজান্তেই তাদের কোটার পণ্য উত্তোলন করে অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে, যা ডিলারদের জন্য বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ডিলারদের কাছে পণ্য বিক্রি করতে কোম্পানি অতিরিক্ত ৫% কমিশন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা দেওয়া হয়নি। কোম্পানি ক্যাম্পেইনের নামে ডিলারদের কাছ থেকে অধিক পরিমাণে পণ্য বিক্রি করিয়েছে, কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সুবিধা দেয়নি।
২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বাৎসরিক ক্লোজিং বেনিফিট, গোডাউন ভাড়া, এসি ইনস্টলেশন, ডিজিটাল ক্যাম্পেইন, রেজিস্ট্রেশন অফার, বিদেশ ভ্রমণ অফার, গাড়ির অফার, অতিরিক্ত ৩% কমিশন— কোনো কিছুই কোম্পানি দেয়নি।
এছাড়া, ওয়ালটন ও মার্সেল কোম্পানি ডিলারদের কাছ থেকে ব্ল্যাংক চেক ও স্ট্যাম্প জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে রাখে এবং তাদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। অভিযোগ রয়েছে, কোম্পানির ‘রিকভারি টিম’ নামে একটি দল রয়েছে, যারা অবসরপ্রাপ্ত আমলা ও দলীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাধ্যমে ডিলারদের উপর চাপ প্রয়োগ করে।
ডিলারদের ১০ দফা দাবি ১) পণ্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নেওয়া টাকা ফেরত দিতে হবে। ২) ২০১৯-২০২৩ সালের মধ্যে প্রতিশ্রুত কমিশন পরিশোধ করতে হবে। ৩) ডিস্ট্রিবিউটরদের সকল ডেবিট অ্যাডজাস্টমেন্টের টাকা ফেরত দিতে হবে। ৪) মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ৫) ডিলারদের কাছ থেকে নেওয়া ব্ল্যাংক চেক ফেরত দিতে হবে। ৬) অচল পণ্য ফেরত নিয়ে সচল পণ্য সরবরাহ করতে হবে। ৭) ক্ষতিগ্রস্ত ডিলারদের পুনরায় ব্যবসায়িক সুবিধা দিতে হবে। ৮) ডিস্ট্রিবিউটরের কাছাকাছি প্লাজা থাকলে তা বন্ধ করতে হবে। ৯) দুর্নীতিবাজ কোম্পানি প্রতিনিধিদের অপসারণ ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ১০) প্রতিমাসে ডিলারদের হিসাব স্বচ্ছতার সাথে বুঝিয়ে দিতে হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ব্যবসায়ীরা দাবি জানান, ওয়ালটন ও মার্সেল কোম্পানির প্রতারণার অবসান ঘটাতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
Leave a Reply