লালমনিরহাট প্রতিনিধি
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের উদ্যোগে আগামী ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি ৪৮ ঘণ্টাব্যাপী লাগাতার কর্মসূচি পালনের কথা থাকলেও উজানের পানির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে তিস্তাপাড়ের মানুষের মধ্যে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শুষ্ক মৌসুমে যেখানে তিস্তায় পানির প্রবাহ কম থাকে, সেখানে হঠাৎ উজান থেকে পানি ছেড়ে দেওয়া অস্বাভাবিক ঘটনা। তারা সন্দেহ করছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ শিরোনামে অনুষ্ঠিতব্য কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্ত করতেই উজানের পানি ছেড়েছে। ফলে তিস্তাপাড়ের ধূধূ বালুচরে দেখা দিয়েছে পানি, যা ফসলের ক্ষতি করতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা কুদ্দুস আলী জানান, “এই সমাবেশ কোনো দলের নয়, এটি তিস্তাপাড়ের সাধারণ মানুষের বাঁচার লড়াই। দলমত নির্বিশেষে সবাই এতে অংশগ্রহণ করবে। তবে প্রতিবেশী দেশ ঈর্ষান্বিত হয়ে ষড়যন্ত্র করছে বলে মনে হচ্ছে। তাই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে এবং ন্যায্য অধিকার আদায়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার পানি বৃদ্ধির বিষয়টি স্বীকার করলেও আশ্বস্ত করেন যে এতে তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তিনি জানান, “তিস্তা ব্যারেজের জলকপাট বন্ধ রয়েছে, তাই পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে।”
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ সংগঠনটি প্রধান সমন্বয়ক আসাদুল হাবীব দুলুর নেতৃত্বে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, ১৭ ফেব্রুয়ারি কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হতে পারেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
কর্মসূচি চলাকালীন তিস্তাপাড়ের মানুষের দুর্দশার চিত্র বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে আয়োজকরা পরিকল্পনা করেছেন, রাতে মশাল জ্বালানো কর্মসূচি, মঞ্চ নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং তিস্তা অববাহিকার সংকট তুলে ধরতে গণসমাবেশ
তিস্তা অববাহিকায় বসবাসরত লাখো মানুষ ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারির এই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে একটি নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছে।
তারা আশা করছেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে তিস্তার পানির ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলন আরও বেগবান হবে এবং আন্তর্জাতিক মহলে দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।
Leave a Reply