অনলাইন ডেক্স :
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দাবি ছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার দেওয়া ভুয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছেন। এরপরই ট্রাম্প কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘জেলেনস্কি একজন ডিক্টেটর বা স্বৈরাচারী।’ এই মন্তব্যের ফলে দুই নেতার মধ্যে বিরোধ আরও তীব্র হয়।
ট্রাম্পের মন্তব্য মেনে নিতে পারেননি জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারসহ ইউরোপের নেতারা। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন ও রাশিয়া নিয়ে মার্কিন দূত কিথ কেলগ বৃহস্পতিবার কিয়েভে গিয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বুধবার তিনি ইউক্রেনের সেনাপ্রধানসহ অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
জেলেনস্কিকে ‘ডিক্টেটর’ বলার পর ট্রাম্প ফ্লোরিডার একটি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘জেলেনস্কি শুধু জো বাইডেনের সুরে সুর মেলাতে পারেন।’ এর কয়েক ঘণ্টা পর, ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে জেলেনস্কির সমালোচনা করে বলেন, ‘জেলেনস্কি নির্বাচন হতে দিচ্ছেন না। ইউক্রেনের সমীক্ষায় তার জনপ্রিয়তা কমছে। যখন দেশের প্রতিটি শহর ধ্বংস হচ্ছে, তখন কীভাবে তার জনপ্রিয়তা বেশি থাকতে পারে?’
তিনি ইউক্রেন থেকে রেয়ার আর্থ খনিজ আহরণের প্রচেষ্টায় জেলেনস্কির বাধাদানের প্রসঙ্গও তোলেন এবং অভিযোগ করেন, ‘জেলেনস্কি এই চুক্তি ভেঙেছেন।’
ট্রাম্পের সমালোচনার জবাবে জেলেনস্কি বলেন, ‘বিশ্বের সামনে একটাই বিকল্প আছে—হয় পুতিনের সঙ্গে থাকুন অথবা শান্তির পক্ষে থাকুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, রাশিয়া সমানে ভুয়া তথ্য প্রচার করছে। নেতা হিসেবে ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলছি, তিনি ওই ভুয়া তথ্যের জগতে বাস করছেন।’
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির গণতান্ত্রিক বৈধতাকে অস্বীকার করাটা ভুল ও ভয়ংকর।’ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ফোন করে বলেন, তিনি তাকেই সমর্থন করছেন। ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্র জানান, স্টারমার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের পক্ষে আছেন।
সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টেরসন ট্রাম্পের মন্তব্যের নিন্দা করেন, আর জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবক বলেন, ‘ট্রাম্প অবাস্তব কথা বলছেন।’
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, তার দেশ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির পাশে আছে।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের মানুষ কেবল তাদের স্বাধীনতা ও অখণ্ডতা রক্ষার জন্য লড়াই করছেন না, বিশ্বকে নিরাপদ রাখতে এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার ব্যবস্থার জন্যও লড়াই করছেন।’
ট্রুডো আরও বলেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বেআইনি, অনৈতিক এবং যুক্তিহীনভাবে আন্তর্জাতিক আইন ভেঙেছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
সুত্র : কালের কন্ঠ।
Leave a Reply