মেহেরপুর প্রতিনিধি :
অর্থঋণ মামলায় সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ছোট ভাই ও মেহেরপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সরফরাজ হোসেন মৃদুলকে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মেহেরপুর যুগ্ম দায়রা জজ আদালতের বিচারক এইচ এম কবির হোসেন এ রায় দেন। রায়ে বলা হয়েছে, ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার মধ্যে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা বাদী দেবাশীষ বাগচিকে এবং বাকি ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।
২০২৩ সালে বাদী দেবাশীষ বাগচি চেক ডিজঅনারের অভিযোগে সরফরাজ হোসেন মৃদুলের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলা করেন (মামলা নম্বর- ৯০৭/২৩, মেহেরপুর)। মামলার অভিযোগে তিনি জানান, ২০১৫ সালে সরফরাজ হোসেন মৃদুলের সঙ্গে যৌথভাবে ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করেন এবং ২০২০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৩০-৩৫টি নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেন, যার মোট মূল্য আনুমানিক ২৫-২৭ কোটি টাকা।
২০২১ সালে ব্যবসায়িক সম্পর্কের অবসান হলে দেবাশীষ বাগচির প্রাপ্য অর্থ দাঁড়ায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। দীর্ঘদিন দেনা পরিশোধ না করায় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আলোচনার মাধ্যমে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন মৃদুল। সেই অনুযায়ী ১৬ জুলাই ঢাকায় সাক্ষাতের পর তিনি ২৪ জুলাই তারিখ দেওয়া রূপালী ব্যাংকের একটি চেক প্রদান করেন।
তবে, ২৪ জুলাই ব্যাংকে চেক জমা দেওয়ার পর তা ডিজঅনার হয়। পরে ব্যাংক জানায়, সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট ২০২১ সালের ৪ এপ্রিলেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও টাকা পরিশোধ না করায় দেবাশীষ বাগচি ৩০ আগস্ট নোটিশ পাঠান এবং পরবর্তী সময়ে মামলা করেন। আজ আদালতের রায় ঘোষণার সময় কারাগার থেকে সরফরাজ হোসেন মৃদুলকে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর তাকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে, মামলার বাদী দেবাশীষ বাগচি মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। রায় ঘোষণার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘আমিই মানু’ লিখে একটি হাসিমাখা ছবি পোস্ট করেন, যা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।
মামলায় বাদীপক্ষে আইনজীবী হিসেবে ছিলেন খ. ম. হারুন ইমতিয়াজ বিন জুয়েল এবং আসামিপক্ষে দায়িত্ব পালন করেন খন্দকার আব্দুল মতিন।
পুলিশ জানিয়েছে, আদালতের রায় যথাযথভাবে কার্যকর করা হবে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply