দিনাজপুর প্রতিনিধি :
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে আলুর ন্যায্য মূল্য ও হিমাগারের অন্যায্য ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে দ্বিতীয় দফায় আন্দোলনে নেমেছেন আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে আন্দোলনকারীরা পৌরশহরের বিজয় চত্বরে মানববন্ধন শেষে আলু ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করেন। এর আগে, ১৩ ফেব্রুয়ারি একই দাবিতে প্রথম দফায় সড়ক অবরোধ করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও দাবি পূরণ না হওয়ায় আন্দোলনকারীরা আবারও রাজপথে নামেন।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফজলে এলাহী, বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল গফুর ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. হায়দার আলী। তারা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিলেও আন্দোলনকারীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দলকে সঙ্গে নিয়ে চাকাই এলাকার হিমাদ্রি কোল্ডস্টোরেজ, হাবলুর হাটের শাহী কোল্ডস্টোরেজ-৪, বটতলীর রাহবার কোল্ডস্টোরেজ ও দলুয়া এলাকার শাহী কোল্ডস্টোরেজ-২ হিমাগার সিলগালা করে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মালেক। বক্তব্য দেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক হর সুন্দর রায়, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ধলু, আলুচাষি রেজাউল ইসলাম, কছিমউদ্দিন, ব্যবসায়ী ইরফান আলী প্রমুখ।
আন্দোলনকারীরা জানান, কয়েক বছর ধরে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। এতে চাষি ও ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছেন। দুই বছরে অনেকে আলু চাষ বন্ধ করেছেন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী এবার মহাসড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানানো হয়।
বীরগঞ্জ আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বলেন, ‘হিমাগার মালিকরা অন্যায্যভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করেছেন। বাজারে আলুর মূল্য কম থাকায় কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অন্যদিকে, হিমাগারের অস্বাভাবিক ভাড়া বৃদ্ধির কারণে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা পথে বসতে চলেছেন। তাই বাধ্য হয়ে আমরা রাস্তায় নেমেছি।’
হিমাদ্রি লিমিটেডের প্রজেক্ট ইনচার্জ নুরুন্নবী মন্ডল জানান, প্রশাসন প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করেছে, বিষয়টি মালিক পক্ষকে জানানো হবে। অগ্রিম বুকিং ও আলু সংগ্রহ নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত মালিকপক্ষ নেবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে এলাহী বলেন, ‘হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো সরকারি নির্দেশনা নেই। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জনগণের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ২৭ ধারার বিধান অনুযায়ী হিমাগারগুলো সিলগালা করা হয়েছে এবং সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকবে।’
Leave a Reply