গাইবান্ধা সংবাদদাতা :
ছাত্র-জনতার বহুল আকাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি – এনসিপি) আত্মপ্রকাশ করেছে গত শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে আয়োজিত আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে লক্ষাধিক শুভাকাঙ্ক্ষী অংশ নেন। এদিন সন্ধ্যার পর নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক ও আখতার হোসেনকে সদস্য সচিব করে দলটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
পরদিন শনিবার (১ মার্চ) রাতে এনসিপি ২১৬ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশ করে। এতে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নাজমুল হাসান সোহাগ এবং গাইবান্ধা পৌরসভার খানকাহ শরীফ এলাকার ফিহাদুর রহমান দিবস জায়গা পেয়েছেন। নাজমুল হাসান সোহাগকে সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) এবং ফিহাদুর রহমান দিবসকে সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই গঠিত হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থী নয় এমন নাগরিকদের নিয়ে সেপ্টেম্বরে গঠিত হয় জাতীয় নাগরিক কমিটি। এই দুটি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগেই গঠিত হয়েছে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)।
ধাপেরহাট ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল হাসান সোহাগ ২০০৯ সালে বগুড়ার বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি এবং ২০১১ সালে রংপুরের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১২-১৩ সেশনে ভর্তি হয়ে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন এবং বর্তমানে এম. ফিল. প্রোগ্রামে (গবেষক) অধ্যয়নরত।
তিনি ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন এবং ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরামর্শক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় তিনি মাহামুদ মোত্তাকিম মণ্ডলের সঙ্গে গাইবান্ধার সাত উপজেলায় জাতীয় নাগরিক কমিটি সংগঠিত করেছেন।
গাইবান্ধা পৌরসভার খানকাহ শরীফ এলাকার ফিহাদুর রহমান দিবস আহম্মদ উদ্দিন শাহ্ শিশু নিকেতন স্কুল ও কলেজ থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি এবং রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাশ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ২০১৬-১৭ সেশনে ভর্তি হয়ে অনার্স সম্পন্ন করেন।
ফিহাদুর রহমান দিবস ২৪ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান ও ৪ আগস্ট গাইবান্ধার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং ৫ আগস্ট থেকে তিনি আন্দোলনের পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। তার উদ্যোগে ন্যায্যমূল্যের জনতার বাজার, বন্যার্তদের সহায়তায় ত্রাণ ও শীতবস্ত্র বিতরণ, গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের জনবল ও শয্যা সংকটের সমাধানের দাবি তোলা, দুর্গাপূজায় কয়েকটি মণ্ডপে নিরাপত্তার স্বার্থে ছাত্রপ্রতিনিধি নিয়োজিতকরণসহ জেলার উন্নয়নে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন।
গাইবান্ধার দুই তরুণ নেতার জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্তি তাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রমকে আরও বেগবান করবে বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
Leave a Reply