কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামে শুরু হয়েছে বিসিক উদ্যোক্তা মেলা। তবে উদ্যোক্তা ও দর্শনার্থীদের সমাগম না থাকায় একপ্রকার দায়সারাভাবে চলছে এই মেলা। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মেলা প্রাঙ্গণ প্রায় জনশূন্য, অধিকাংশ স্টলই খালি পড়ে আছে।
কুড়িগ্রাম শহরের কলেজ মোড়স্থ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে গত বৃহস্পতিবার থেকে ১০ দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হয়। তবে পাশের আউটার স্টেডিয়ামে বাণিজ্য মেলা বসায় উদ্যোক্তা মেলার গুরুত্ব ও আকর্ষণ অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। ফলে উদ্যোক্তারা এতে অংশ নেওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন।
শুক্রবার মেলা ঘুরে দেখা যায়, ৫০টি স্টলের মধ্যে মাত্র ১৩টিতে উদ্যোক্তারা বসেছেন, বাকিগুলো খালি। প্রচারের অভাব এবং যথাযথ পরিকল্পনার অভাবে উদ্যোক্তারা আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
নীলফামারী সদর থেকে আসা উদ্যোক্তা কামাল হোসেন জানান, তিনি ৪ হাজার টাকা ফি দিয়ে দুটি স্টল নিয়েছেন, যেখানে তিনি সোয়েটার ও খেলনার পসরা সাজিয়েছেন। তবে দর্শনার্থী না থাকায় বিক্রি কম হচ্ছে। সৈয়দপুর থেকে আসা হস্তশিল্প উদ্যোক্তা জোৎস্না খাতুন বলেন, ‘দুই হাজার টাকা ফি দিয়ে স্টল সাজিয়েছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র একটি কানটুপি বিক্রি করতে পেরেছি।’
স্থানীয় উদ্যোক্তাদের মতো কুড়িগ্রামের সারা বুটিকস-এর সিসিলিয়া ঢাকী, আজান ফ্যাশন হাউজের সানজিদা নাজনিন ও জেএম হ্যান্ডিক্রাফট-এর মাকসুদা বেগমও হতাশ। তারা জানান, ক্রেতার অভাবে তাদের পণ্য বিক্রি হচ্ছে না, ফলে ব্যবসায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রাম সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব নীলু বলেন, ‘জেলায় আড়াই থেকে তিন হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা থাকলেও মেলার স্টলগুলো ফাঁকা। যথাযথ প্রচার ও পরিকল্পনা না থাকায় মেলাটি সফল হচ্ছে না।’
কুড়িগ্রাম বিসিক-এর উপ-পরিচালক শাহ মোহাম্মদ জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানিয়েছি, বাইরের জেলা থেকেও কিছু উদ্যোক্তা এনেছি। আশা করছি, অন্তত ৪০-৪৫টি স্টল পূর্ণ হবে।’ তিনি জানান, মেলার জন্য ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা বাজেট বরাদ্দ রয়েছে এবং অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।
তবে উদ্যোক্তারা মনে করছেন, যথাযথ প্রচার ও পরিকল্পনার অভাবে মেলাটি কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পারছে না।
Leave a Reply