লালমনিরহাট সংবাদদাতা :
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার শিয়ালখোওয়া সরঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এস.সি স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে পুনরায় হাট বসানোর পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে শিক্ষা কার্যক্রমে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সম্প্রতি একজন প্রভাবশালী ইজারাদার শিয়ালখোওয়া হাট ইজারা নেওয়ার পর থেকে ওই মাঠে আবার হাট বসানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকরা। তারা উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন এবং হাট না বসানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যালয় দুটির পাশেই রয়েছে একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও তিনটি কিন্ডারগার্টেন। সব মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ওই এলাকায় পড়াশোনা করছে। মাঠে হাট বসলে গবাদিপশু, মাছ, তামাকসহ নানা পণ্যের বেচাকেনা হবে, সৃষ্টি হবে শব্দ ও বর্জ্য দূষণ। এতে শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। পাশাপাশি অতিরিক্ত জনসমাগমের ফলে এলাকায় সামাজিক অপরাধ বাড়ারও ঝুঁকি রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী জানান, এর আগে ওই মাঠে সপ্তাহে দু’দিন হাট বসতো এবং প্রতিদিন বাজার চলতো। কিন্তু গত বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও সচেতন নাগরিকদের দাবির মুখে হাটটি সরিয়ে নেওয়া হয়, যার ফলে শিক্ষার পরিবেশ স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এখন আবার হাট বসানোর পরিকল্পনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে ব্যাপক উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
শিয়ালখোওয়া সরঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাশেম আলী বলেন, “বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসলে শিক্ষার্থীদের ওপর এর সরাসরি প্রভাব পড়বে।”
তবে কোনো পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে কি না—এই প্রশ্নে তিনি মন্তব্য করতে চাননি।
এস.সি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিন্দ্র নাথ রায় বলেন, “হাট বসলে পাঠদানে প্রভাব পড়বে, তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।”
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা জানান, “এর আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দাবিতে হাট সরানো হয়েছিল। এখন নতুন করে আলোচনা চলছে। বিকল্প জায়গার সন্ধান নেওয়া হচ্ছে এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুজিবর রহমান বলেন, “যেসব স্থানে স্কুল মাঠে হাট বসতো, সেসব হাট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শিয়ালখোওয়ার ক্ষেত্রেও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শিক্ষা ও পরিবেশ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে পুরো শিয়ালখোওয়া এলাকাবাসী।
Leave a Reply