কল্যান রায় (জয়ন্ত) :
জুলাই বিপ্লবের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে যশোরে অনুষ্ঠিত হলো একটি প্রেরণামূলক মতবিনিময় সভা। “আগামীর যশোর যেমন দেখতে চাই” শীর্ষক এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে সামাজিক সংগঠন ‘যশোর কমিউনিটি’।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে আয়োজিত এই সভায় শহরের নানা শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজনেরা অংশ নেন এবং আগামী দিনের যশোর কেমন হওয়া উচিত—সে বিষয়ে তাদের ভাবনা, স্বপ্ন ও বাস্তবধর্মী প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ভারীয়ান হাসার। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের শীর্ষ নেতা ও রাজনীতিক মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেন, “যশোর বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রতিবাদী চেতনার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এই জেলার মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার থেকেছে। এখন সময় এসেছে নতুন প্রজন্মকে নেতৃত্বে এনে একটি মানবিক, প্রগতিশীল এবং প্রযুক্তিনির্ভর যশোর গড়ে তোলার।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারুফুল ইসলাম। তিনি বলেন, “শুধু প্রশাসনিক নয়, রাজনৈতিকভাবে সচেতন ও সংগঠিত একটি শহর গড়ার প্রয়োজন রয়েছে। প্রগতিশীল চিন্তা ও কার্যকর পরিকল্পনা থাকলেই উন্নত যশোর গঠন সম্ভব।”
সাবেক ছাত্রনেতা ভিপি আব্দুল কাদের তার বক্তব্যে বলেন, “যুবসমাজকে শুধু অভিযোগ নয়, দায়িত্ব নিয়ে নেতৃত্বে আসতে হবে। সড়ক নিরাপত্তা, নারী নিরাপত্তা, পরিবেশ ও কর্মসংস্থানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তরুণদের এগিয়ে আসা জরুরি।”
ধর্মীয় দিক থেকে ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠনের উপর গুরুত্বারোপ করে মাওলানা শোয়াইব হোসেন বলেন, “যশোরে আমরা এমন পরিবেশ চাই যেখানে ধর্ম হবে সম্প্রীতির উৎস, বিভেদের নয়।”
শিল্প-সংস্কৃতিকে শহরের উন্নয়নের অন্যতম ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে ফেরদৌস পরশ বলেন, “যশোরে মেধাবী ও সৃষ্টিশীল মানুষের অভাব নেই, দরকার কেবল সম্মিলিত উদ্যোগ ও সংস্কৃতির সঠিক চর্চা।”
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বেনজিন খান, হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ, খালিদ সাইফুল্লাহ জুয়েল, শেখ ফরহাদ রহমান মুন্না, মাসুম বিল্লাহ, মুফতি আবু জ্বর বিন হাফিজ, মিলন শেখ, কামরুল ইসলাম শিহাব, আরিফ বিল্লাহ, ইমতিয়াজ উদ্দীন, মুহাম্মদ আলামিন, কামরুন্নাহার নিপা, ফেরদাউস হাবিব কলিন্স, মাওলানা রায়হান হুসাইন, জেসিনা মুর্শিদ প্রাপ্তি, সুমন যোগেন, আব্দুল্লাহ আল হুসাইন, ফেরদাউস হাসান জাকির, আরিফ ফয়সাল, আব্দুল্লাহ আল নাদিয়, বি এম সাগর হোসাইন এবং আশিকুর রহমান তুহিন।
বক্তারা বলেন, যশোরকে একটি নিরাপদ, আধুনিক, বৈচিত্র্যময় ও মানবিক শহরে পরিণত করতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, নাগরিকদের সচেতনতা এবং প্রশাসনিক জবাবদিহিতা একযোগে নিশ্চিত করতে হবে। নারী, শিশু, প্রবীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার দাবিও জানান তারা।
সভা শেষে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রাণবন্ত পরিবেশে সম্পন্ন হওয়া এই মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
Leave a Reply