নিজস্ব প্রতিবেদক :
যশোরের দুঃখখ্যাত ভবদহের দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত তিন সংসদ প্রার্থী। সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে ভবদহ মহাবিদ্যালয় মাঠে ভবদহ আমডাঙ্গা সংস্কার আন্দোলন কমিটির ব্যানারে আয়োজিত এক সমাবেশে তারা এই প্রতিশ্রুতি দেন।
ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসন ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনের দাবিতে আয়োজিত এই সমাবেশে অংশ নেন জামায়াতের নেতাকর্মীসহ ভবদহপাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী। তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সংবলিত প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার।
ভবদহ অঞ্চলটি যশোরের অভয়নগর, মণিরামপুর, কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত। মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদীর মাধ্যমে পানি ওঠানামা করে এ অঞ্চলে। তবে নদীগুলোর নাব্যতা হারিয়ে যাওয়ায় চার দশকের বেশি সময় ধরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় ভুগছে কয়েক লাখ মানুষ। এখনও ওই এলাকায় ঘরবাড়ি, ফসলি মাঠ, রাস্তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমনকি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত হাঁটু সমান পানিতে ডুবে আছে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর ও যশোর-৪ (বাঘারপাড়া–অভয়নগর) আসনের প্রার্থী অধ্যাপক গোলাম রসুল বলেন,
“ভবদহের জলাবদ্ধতা শুধু ভৌগোলিক সমস্যা নয়, এটি মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। অতীতের সরকারগুলো ভবদহ নিয়ে শুধু প্রতিশ্রুতির রাজনীতি করেছে, বাস্তব পদক্ষেপ নেয়নি। তারা ভবদহকে পুঁজি করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে। আমরা নির্বাচিত হলে ভবদহের স্থায়ী সমাধান করব— মানুষকে আর আন্দোলন বা রক্ত দিতে হবে না।” তিনি একই সঙ্গে ভবদহ প্রকল্পের নামে দুর্নীতিতে জড়িতদের শাস্তিরও দাবি জানান।
বিশেষ অতিথি যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের প্রার্থী অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক বলেন, “ভবদহবাসী ত্রাণ নয়, মুক্তি চায়। বিগত সরকারের আমলা ও নেতারা প্রকল্পের নামে কোটি কোটি টাকা লুট করেছে, যার ফলে হাজারো মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে ভবদহকে নিরাপদ জনপদ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন কেশবপুরের সুফলাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম মঞ্জুর রহমান। এতে আরও বক্তব্য রাখেন যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের প্রার্থী অধ্যাপক মুক্তার আলী, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ আবু জাফর সিদ্দিকী, ভবদহ আন্দোলন কমিটির নেতা আবুল হাশিম রেজা, উপজেলা আমীর ফজলুর হক প্রমুখ।
Leave a Reply