অনলাইন ডেক্স :
অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের মতোই ক্যালসিয়াম মানবদেহের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান। হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত রাখতে, স্নায়ুতন্ত্র ও পেশির স্বাভাবিক কার্যকারিতা বজায় রাখতে ক্যালসিয়াম অপরিহার্য। তাই এর ঘাটতি হলে শরীরে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের জটিলতা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক শেহজাদা সেলিম জানান, রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমে গেলে ‘হাইপোক্যালসেমিয়া’ নামের একটি অবস্থা তৈরি হয়, যা সাধারণভাবে ক্যালসিয়াম ঘাটতি রোগ হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘমেয়াদি ঘাটতির কারণে দাঁতের ক্ষয়, ছানি, মস্তিষ্কের সমস্যা, এমনকি হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার মতো জটিলতাও দেখা দিতে পারে। এ অবস্থাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা হয় অস্টিওপোরোসিস, যেখানে হাড় ক্ষয়ে গিয়ে সহজেই ভেঙে যায়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের আবহাওয়া, ভৌগলিক অবস্থান, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং পুষ্টি সম্পর্কে সচেতনতার অভাবের কারণেই সাধারণত ৪০ বছর বয়সের পর থেকেই ক্যালসিয়াম ঘাটতির সমস্যা বাড়তে শুরু করে।
সাধারণত ২৪ থেকে ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত মানুষের হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। এই সময়ে হাড়ের গঠন স্বাভাবিক রাখতে ক্যালসিয়াম ও ফসফেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তত ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকা জরুরি।
তবে শুধু ক্যালসিয়াম গ্রহণই যথেষ্ট নয়, শরীরে ভিটামিন ডি-এর পর্যাপ্ত উপস্থিতিও দরকার, কারণ এটি ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে। এছাড়া হাইপোপ্যারাথাইরয়েডিজম, ম্যাগনেসিয়ামের ভারসাম্যহীনতা বা কেমোথেরাপি গ্রহণকারী রোগীদের ক্ষেত্রেও ক্যালসিয়াম ঘাটতি বেশি দেখা দিতে পারে।
ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস:
দুগ্ধজাত খাবার যেমন দুধ, পনির ও দই, ফর্টিফায়েড খাদ্যশস্য, সামুদ্রিক মাছ, মটরশুঁটি, ডুমুর, ব্রকলি, পালং শাক, সয়াদুধ, আমন্ড, আখরোট, বিভিন্ন প্রকার বাদাম এবং তিলের বীজে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
নিয়মিত রোদে থাকা, সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে শরীরে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে থেকে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ না করাই ভালো।
Leave a Reply