যশোর সংবাদদাতা :
বেনাপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধের জেরে প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি ও শার্শা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক বিএনপি নেতা মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম। ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার (২০ অক্টোবর) বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে।
গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকালে ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক আহসানুল কবীর তুহিন জানান, ওই দিন সভাপতি সেলিম অফিসকক্ষে ঢুকে দরজা-জানালা বন্ধ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের পর জামার কলার ধরে চেয়ার থেকে টেনে তুলে বেধড়ক মারধর করেন। পরে প্রমাণ নষ্ট করতে বাইরে থেকে লোক ডেকে অফিসের সিসিটিভি ফুটেজও মুছে ফেলেন তিনি।
প্রথমে নিরাপত্তার ভয়ে ঘটনাটি চেপে যেতে চাইলেও সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মাধ্যমে মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় তিনি বাধ্য হয়ে প্রকৃত ঘটনা জনসম্মুখে প্রকাশ করেন। তুহিন বলেন, “স্থানীয় বিএনপি নেতা সনির মধ্যস্থতায় আমি চুপ ছিলাম। কিন্তু এখন ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। পরিবারসহ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের অপর এক শিক্ষক জানান, বেনাপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ ৫ অক্টোবর শেষ হয়েছে। সেই কমিটির সভাপতি ছিলেন মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম। নতুন কমিটিতে তার নাম না থাকায় ক্ষোভ থেকে তিনি প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছেন।
ঘটনা বিষয়ে অভিযুক্ত যুবদল নেতা সেলিমের বক্তব্য জানার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, “শিক্ষক এমন বক্তব্য দিয়েছেন আমার জানা নেই। তবে, সামনাসামনি আসেন, একসাথে বসে আলোচনা করা যাবে।”
শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সুশীল সমাজ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, “শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর, তাদের সঙ্গে এমন অশোভন আচরণ ক্ষমার অযোগ্য।”
এ ঘটনায় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষক লাঞ্ছিতের মতো ঘটনা দলীয় ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করছে।
Leave a Reply