বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা দেখতে ও তার খোঁজখবর নিতে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে গেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি হাসপাতালে পৌঁছান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানান, সন্ধ্যা ৭টা ৭ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান মির্জা ফখরুল। এরপর তাকে সরাসরি খালেদা জিয়ার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্য থেকে আসা চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল টিম বুধবার দুপুরে এভারকেয়ার হাসপাতালে কার্যক্রম শুরু করেছে। দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন বিখ্যাত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. রিচার্ড বিল। হাসপাতালে এসে তারা প্রথমেই করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) গিয়ে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, বিদেশি চিকিৎসক দলটি স্থানীয় মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করে। খালেদা জিয়ার দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক জটিলতা, ঝুঁকির মাত্রা, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতা এবং পরবর্তী করণীয় বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা মতবিনিময় করেন। প্রথম দিনের কার্যক্রমে তারা রোগীর ক্লিনিক্যাল নথি, সাম্প্রতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট এবং সাপোর্ট সিস্টেমগুলো বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করেন।
চিকিৎসক সূত্র জানিয়েছে, যদিও খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সংকটজনক, তবুও তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। বিদেশি ও দেশি চিকিৎসকের সমন্বিত প্রচেষ্টায় একটি উন্নত চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করার চেষ্টা চলছে।
৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বহুদিন ধরেই হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনি জটিলতাসহ নানা দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। কয়েক দফা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় দুই দিন আগে তাকে কেবিন থেকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কারাদণ্ড, পরবর্তী সাজার স্থগিতাদেশ, বিদেশে চিকিৎসা এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে তার মুক্তি সব মিলিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এখন জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
Leave a Reply