আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ এর নির্দেশে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে তিনি ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
জানা যায়, জোরপূর্বক গুম, খুন ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েও নির্ধারিত শুনানিতে হাজির না হওয়ায় তাকে তলব করে ট্রাইব্যুনাল। হাজিরা দিয়ে তিনি ট্রাইব্যুনালের প্রতি সম্মান জানিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান।
এর আগে গত ২৩ নভেম্বর আইনজীবী হিসেবে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চেয়ে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন জেড আই খান পান্না। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল তাকে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দেয়। কিন্তু ২৭ নভেম্বর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিনি লিখেন, শেখ হাসিনার ট্রাইব্যুনালের প্রতি আস্থা নেই, তাই এমন আদালতে তাকে ডিফেন্ড করা “উচিত না এবং অনৈতিক”। তিনি জানান, তিনি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ডিফেন্স আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পাননি; পাওয়া মাত্র তা জানাবেন।
এদিকে একই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে জেড আই খান পান্না তার পক্ষে শুনানি করবেন বলে জানিয়েছেন।
বুধবার ট্রাইব্যুনালে এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানিও শুরু হয়। টিএফআই সেলে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলার প্রধান আসামি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে সাতজন পলাতক।
শুনানিকে ঘিরে সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ১০ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির করা হলে পরিস্থিতি আরও সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। হাজির হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন কর্নেল এ কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসানসহ আরও কয়েকজন।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সকালে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু করেন। আসামিপক্ষ সময় চাইলে প্রসিকিউশন জানায়, তারা তাদের বক্তব্য শেষ করেই সময় দিতে আপত্তি নেই।
গুম–নির্যাতনের এই আলোচিত মামলায় ট্রাইব্যুনালের পরবর্তী কার্যক্রম ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
Leave a Reply