পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্তজুড়ে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে নজরদারি ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করছে ইরান। দেশটির সেনাবাহিনীর স্থলবাহিনী (আরতেশ) জানিয়েছে, আধুনিক ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সীমান্ত এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ নজরদারিতে আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে অবৈধ অনুপ্রবেশ, সন্ত্রাসী তৎপরতা এবং চোরাচালান রোধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছে তেহরান।
স্থলবাহিনীর উপ-প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী জাহানশাহি বলেন, সীমান্ত এলাকায় অত্যাধুনিক ক্যামেরা, সেন্সর, ওয়াচটাওয়ার ও নতুন বেস স্থাপনের কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। পাশাপাশি সীমান্তরক্ষী বাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। তার ভাষায়, “অস্ত্র, মাদক, অবৈধ অভিবাসী ও অনুপ্রবেশকারীদের প্রবেশ পুরোপুরি ঠেকাতে আমরা বহুমুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। নতুন নিরাপত্তা কাঠামো দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
তিনি জানান, স্থলবাহিনীর নিয়মিত মহড়া অব্যাহত রয়েছে, যা বাহিনীর প্রস্তুতি ও দক্ষতা ধরে রাখতে সহায়ক হচ্ছে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময়ে ১২ দিনের যুদ্ধ থেকে ইরান গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম আধুনিকায়ন এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রক্রিয়াও ত্বরান্বিত হয়েছে।
অন্যদিকে, ইরানের সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি কমিটির বৈঠকে সীমান্ত নিরাপত্তা 강화–সংক্রান্ত ‘সমন্বিত সীমান্ত সুরক্ষা পরিকল্পনা’ পর্যালোচনা করা হয়। বৈঠকে সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ, পুলিশ, সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং আইআরজিসির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। কমিটির মুখপাত্র ইব্রাহিম রেজায়ি জানিয়েছেন, পরিকল্পনার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ অনুমোদিত হয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরে ইরান অবৈধ অভিবাসী, সন্ত্রাসী, বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ও চোরাচালানকারীদের তৎপরতার প্রেক্ষিতে সীমান্ত নজরদারি কঠোর করে আসছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি, ইসরায়েলি গোয়েন্দারা ইরান সীমান্তবর্তী সক্রিয় সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা বাড়িয়েছে। এমনকি জুন মাসে ১২ দিনের যুদ্ধ চলাকালে কিছু ‘অবৈধ অভিবাসী’ ইসরায়েলের সহায়তায় ইরানের অভ্যন্তরে অপারেশন পরিচালনা করেছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে।
Leave a Reply