২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বর্তমান বিজিবি) সদর দপ্তরে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডে সরাসরি ২৪ জন ভারতীয় কমান্ডো ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য জড়িত ছিলেন বলে সাক্ষ্যপ্রমাণে উঠে এসেছে। এই তথ্য জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের ১১ মাসের তদন্তের প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে।
সাক্ষীদের জবানবন্দিতে বলা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডের আগে ভারতীয় পক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়। শীর্ষ কর্মকর্তা তাপসের অফিস এবং বাসায় একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ভারতীয় গোয়েন্দাদের নিয়ে হত্যাযজ্ঞের সব কৌশল ঠিক করা হয়।
লে. কর্নেল তাসনিম জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৭টায় একটি পিকআপে দন্ডায়মান দুইজন লোক মেগাফোনে সৈনিকদের ‘আর্মির বিরুদ্ধে লড়বো, ঐক্যবদ্ধ থাকো’ বলে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। সাক্ষী মনে করেন, তাদের ভাষা পশ্চিমবঙ্গের উচ্চারণের মতো ছিল। মেজর সৈয়দ মনিরুল আলম আরও জানিয়েছেন, দরবার হলের ফলস সিলিংয়ে লুকিয়ে থাকার সময় তিনি এমন ভাষা শুনেছেন যা বাংলা, হিন্দি বা চায়নিজ নয়; সম্ভবত এটি সাব-কন্টিনেন্টের কোনো ভাষা।
সিপাহি আইয়ুব বলছেন, গোলাগুলির সময় তিনি দূর থেকে শোনা কথার ভাষা পশ্চিমবঙ্গের দিকের উচ্চারণের বাংলা বলে অনুমান করেছেন। এছাড়া জ. ক্যাপ্টেন শাহনাজ ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে খুঁজে পান বিদেশি উৎসের স্লিংসহ ব্যবহৃত সাবমেশিন গান, যা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বা বিডিআর ব্যবহার করে না।
প্রাক্তন এমপি গোলাম রেজা জানিয়েছেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ও বাহিরে কিছু লোককে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখেন। তারা লাইফ জ্যাকেট খুলে ছোট ছোট টিনের ঘরে পালাচ্ছিল, যা দেখে তিনি মনে করেছিলেন তারা দেশের লোক নন।
জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে ভারতীয় কমান্ডোদের সরাসরি অংশগ্রহণের প্রমাণ পেয়ে তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। কমিশনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের দিন বহু পরিকল্পিত বৈঠক এবং সমন্বয়ের মাধ্যমে হত্যা অভিযান পরিচালিত হয়েছিল।
Leave a Reply