ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দাবি করেছে, দেশের অন্তর্বর্তী সরকার এখনো দুর্নীতিবিরোধী কঠোর অবস্থান গ্রহণে সক্ষম হয়নি। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ধানমণ্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহার বিশ্লেষণ উপস্থাপনকালে এ মন্তব্য করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “গত ৫৪ বছর ও গত ১৫ বছরের জঞ্জাল কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে। চট করে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়।” তিনি আরও জানান, দেশে দুর্নীতি বেড়েছে না কমেছে এ বিষয়ে টিআইবির সাম্প্রতিক কোনো পরিমাপ নেই, তবে দুর্নীতি অব্যাহত রয়েছে।
নির্বাচনী ইশতেহারে রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোকে ক্যাপিটাল, পেশিশক্তি, অর্থ ও ধর্মের প্রভাব সম্পর্কে তাদের অবস্থান ইশতেহারে স্পষ্ট করতে হবে।” সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি প্রতিরোধ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মতো মৌলিক বিষয়গুলো ইশতেহারে প্রতিফলিত হওয়া জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ব্যবসা খাতের সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “এটা অনেকটা রাজনৈতিক দলের সংস্কারের মতো ভেতর থেকেই পরিবর্তন আনতে হবে।” উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারলে ব্যবসায়ীদেরই লাভ হবে বলে তিনি মত দেন। অন্যথায় বিশেষ সুবিধাভোগী এক শ্রেণির ব্যবসায়ী লাভবান হন, যা গত ১৫ বছরে রাষ্ট্রকাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং কর্তৃত্ববাদকে শক্তিশালী করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক শীতল কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়েও মন্তব্য করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। তিনি জানান, “ভারতের ইতিহাসে বর্তমান পরিস্থিতি সবচেয়ে বিব্রতকর কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পরাজয়; কিন্তু তারা এখনো এটা স্বীকার করতে পারেনি।” তবে এই পরিস্থিতি দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের পথে বাধা নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের সুযোগ এখনো রয়েছে। ভারত যদি আরও বস্তুনিষ্ঠ অবস্থান নিত এবং কর্তৃত্ববাদের প্রতি সমর্থন থেকে সরে আসত, তবে তা বাংলাদেশের জন্য আরও সুবিধাজনক হতো।
Leave a Reply