ওজন বা ক্যালরি কমানোর জন্য মানুষ নানা ডায়েট বা শরীরচর্চা করেন। তবে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টমিনিস্টারের গবেষকরা এবার এক চমকপ্রদ তথ্য জানিয়েছেন শুধু হরর সিনেমা দেখলেই শরীরের ক্যালরি পোড়ানো সম্ভব।
২০১২ সালে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, ৯০ মিনিটের একটি শ্বাসরুদ্ধকর হরর সিনেমা দেখলে যে পরিমাণ ক্যালরি খরচ হয়, তা প্রায় আধা ঘণ্টা হাঁটার সমান। গড় হিসাব অনুযায়ী একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য হরর সিনেমা দেখলে প্রায় ১১৩ ক্যালরি পর্যন্ত পোড়ানো সম্ভব, যা একটি ছোট চকোলেট বারের সমপরিমাণ।
গবেষকরা ১০টি ক্লাসিক হরর সিনেমার ওপর পরীক্ষা চালান এবং দেখেন, সব সিনেমার প্রভাব সমান নয়। সর্বোচ্চ ক্যালরি পোড়ানো সিনেমা হিসেবে প্রথম স্থান দখল করেছে স্ট্যানলি কুবরিকের বিখ্যাত সাইকোলজিক্যাল হরর ‘দ্য শাইনিং’, যা দেখলে গড়ে ১৮৪ ক্যালরি খরচ হয়। এরপর আসে ‘জস’ (১৬১ ক্যালরি) এবং ‘দ্য এক্সরসিস্ট’ (১৫৮ ক্যালরি)।
গবেষকরা ব্যাখ্যা করেছেন, হঠাৎ চমকে দেওয়ার মতো দৃশ্য থাকলে হার্ট রেট দ্রুত বেড়ে যায়। ইউনিভার্সিটির সেল মেটাবলিজম ও ফিজিওলজি বিভাগের প্রভাষক ডা. রিচার্ড ম্যাকেঞ্জি বলেন, “ভয়ের সময় অ্যাড্রেনালিনের প্রবাহ বেড়ে যায়, যা ক্ষুধা কমায় এবং বেসাল মেটাবলিক রেট বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে বেশি ক্যালরি পোড়ানো সম্ভব হয়।”
গবেষণায় দেখা গেছে, দর্শকদের হৃৎস্পন্দন, অক্সিজেন গ্রহণের মাত্রা এবং কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের হার বৃদ্ধি পায়, ফলে সাধারণ সময়ের তুলনায় ক্যালরি খরচ এক-তৃতীয়াংশ বেশি হয়। লাভফিল্মের সম্পাদক হেলেন কাউলি বলেন, “ভয়ের দৃশ্য দেখার সময় অনেকেই বালিশের আড়ালে মুখ লুকান। তবে যারা ক্যালরি কমাতে চান, তাদের চোখ পর্দার দিকে রাখা উচিত।”
গবেষণায় শীর্ষ ১০টি হরর সিনেমার তালিকায় রয়েছে:
১. দ্য শাইনিং (১৮৪ ক্যালরি)
২. জস (১৬১ ক্যালরি)
৩. দ্য এক্সরসিস্ট (১৫৮ ক্যালরি)
৪. এলিয়েন (১৫২ ক্যালরি)
৫. স (১৩৩ ক্যালরি)
৬. আ নাইটমেয়ার অন এলম স্ট্রিট (১১৮ ক্যালরি)
৭. প্যারান নরমাল অ্যাক্টিভিটি (১১১ ক্যালরি)
৮. দ্য ব্লেয়ার উইচ প্রজেক্ট (১০৫ ক্যালরি)
৯. দ্য টেক্সাস চেইনস ম্যাসাকার (১০৭ ক্যালরি)
১০. আরইসি [Rec] (১০১ ক্যালরি)
এই গবেষণায় স্পষ্ট হয়েছে, শুধু ভয়ের অনুভূতিতেই শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি পেতে পারে এবং স্বাভাবিকভাবেই কিছু ক্যালরি খরচ হয়। তাই হরর সিনেমা প্রেমীদের জন্য এটি একটি দারুণ সাপ্লিমেন্টারি ব্যায়ামের উপায় হতে পারে।
Leave a Reply