অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তই পৃথিবীর একমাত্র সীমান্ত যেখানে যুদ্ধাবস্থা না থাকলেও মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনার বাংলাদেশ সবসময় নিন্দা জানিয়ে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও নিন্দা জানাবে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নীলফামারীতে এক হাজার শয্যার চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের জন্য নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “বিএসএফ যদি আমাদের এলাকায় ঢুকে এমন ঘটনা ঘটাত, তাহলে আমরা সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিতাম। বিজিবিকে নির্দেশ দেওয়া হতো অ্যাকশন নেওয়ার জন্য। কিন্তু যেহেতু ঘটনা ভারতের সীমান্তের ভেতরে ঘটে, জোর করে এটি বন্ধ করার কোনো উপায় আমাদের নেই। আমরা যা করতে পারি নিয়মিত প্রতিবাদ জানাই, নোট দিই, তাদের অনুরোধ করি যেন এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। এর বাইরে আমাদের করার কিছু নেই।”
তিনি আরও বলেন, অতীতে যখন বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে “স্বর্ণযুগ” হিসেবে বর্ণনা করা হতো, তখনও সীমান্ত হত্যা বন্ধ হয়নি। “সম্পর্ক যতই ভালো হোক না কেন, ভারতীয় নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না,” মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
চিকেন নেক ইস্যুতে প্রশ্ন করা হলে তৌহিদ হোসেন বলেন, “চিকেন নেক ভারতের, আমাদের না। আমরা সেটা দখল করতে যাব না। ভারত-চীন সম্পর্কের জটিলতা তাদের বিষয়। এ ইস্যুতে আমরা কোনো পক্ষ হব না।”
এদিন তিনি নীলফামারীতে চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল নির্মাণের সম্ভাব্য স্থানও পরিদর্শন করেন। হাসপাতালটির নির্মাণকাজে তিন বছর সময় লাগবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “চীনের অর্থায়নে নির্মিত এই হাসপাতালটি একটি উচ্চমানের রেফারাল হাসপাতাল হবে। শুরুতে চীনারা পরিচালনা করবে, পরে ধীরে ধীরে বাংলাদেশকে হস্তান্তর করা হবে।”
নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, দায়িত্ব শেষে আবারও পুরনো জীবনে ফিরে যাবেন এবং তার কোনো রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই।
পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামানসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply