বাংলা চলচ্চিত্র জগতের প্রখ্যাত প্রযোজক ও পরিচালক রুহুল আমিন বাবুল দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করার পর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। মৃত্যুর খবরটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন অভিনেত্রী নূতন, যিনি তার স্বামীকে হারানোর শোকে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
জানা গেছে, বাবুল দীর্ঘদিন মারাত্মক রোগ ক্যানসারের সঙ্গে সংগ্রাম করে আসছিলেন। কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসলেও আবার অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে কয়েক দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে রবিবার (৭ ডিসেম্বর) বাদ জোহর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ডি ব্লকের জামে মসজিদে, জানাজা শেষে দাফন করা হবে আজিমপুর কবরস্থানে।
রুহুল আমিন বাবুল ১৯৭৮ সালে অভিনেত্রী নূতনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুই কন্যা সন্তান: লাবিবা আমিন (বড় মেয়ে) এবং ফারহানা আমিন রীতু (ছোট মেয়ে)।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জসিম, আমান, গুই এবং রুহুল আমিন বাবুল মিলে একটি ফাইটিং গ্রুপ গঠন করেন, যা পরে জেম্স গ্রুপ নামে পরিচিতি লাভ করে। এই গ্রুপ সিনেমার দৃশ্যধারণে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করত। তবে শুধুই অ্যাকশন সিনেমাতেই তারা ব্যস্ত ছিলেন না, প্রযোজনার ক্ষেত্রেও তাদের সাফল্য অনস্বীকার্য।
তাদের প্রযোজিত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘দোস্ত দুশমন’, ‘বারুদ’, ‘চাঁদ সুরুজ’, ‘কাবিন’ এবং আরও অনেকে। বিশেষভাবে ১৯৮০-এর দশকে ‘দোস্ত দুশমন’ সিনেমাটি দর্শকদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। পরবর্তীতে বাবুল এককভাবে এনবি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান খুলে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় ‘আমি সেই মেয়ে’ সিনেমার মতো কাজ পরিচালনা করেন।
চলচ্চিত্র জগতে বাবুলের অবদান, প্রযোজনা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা তাকে এক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাঁর প্রয়াণে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের একটি বড় শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে।
Leave a Reply