ঢাকা সেনানিবাসে আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজে (এএফএমসি) আজ রবিবার অনুষ্ঠিত হলো প্রতিষ্ঠানের ১৮তম কাউন্সিল অব দ্য কলেজ সভা। সভায় সভাপতিত্ব করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এতে উপস্থিত ছিলেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান, ডিজিএমএস-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাজী মো. রশীদ-উন-নবী, সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান, এএফএমসির কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. মাসুদুল আলম মজুমদার এবং বিইউপি উপাচার্য মেজর জেনারেল মো. মাহবুব-উল আলম। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা, অর্থ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং তিন বাহিনীর প্রতিনিধিরাও সভায় যোগ দেন।
সভায় কলেজের বাজেট, ভর্তি প্রক্রিয়া এবং পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। ২০২৪–২০২৫ শিক্ষাবর্ষে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের চারজন বিদেশি ক্যাডেট ফুল-ফ্রি স্কলারশিপে ভর্তি ও শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করা হয় এবং ২০২৫–২০২৬ শিক্ষাবর্ষে ফিলিস্তিনের দুই শিক্ষার্থীকে ভর্তির অনুমোদন দেওয়া হয়। এছাড়া এএফএমসি থেকে পাশকৃত ইন্টার্নি চিকিৎসকদের সিএমএইচ ঢাকায় চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এসময় কলেজের সার্বিক সম্প্রসারণ ও উন্নয়নকল্পে সেনাবাহিনী প্রধান এএফএমসির একাডেমিক ভবন ও ছাত্রীনিবাস সম্প্রসারণ, মসজিদ কমপ্লেক্স, দর্শক গ্যালারি এবং মাল্টিপারপাস হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
১৯৯৯ সালের ২০ জুন মাত্র ৫৬ জন ক্যাডেট নিয়ে যাত্রা শুরু করা এএফএমসি বর্তমানে দেশের প্রধান সামরিক চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ছয়টি শিক্ষাবর্ষে (ইন্টার্নিসহ) এখন ৭৬০ জন ক্যাডেট অধ্যয়নরত। এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ২২টি ব্যাচে দেশি-বিদেশি মিলে মোট ১,৯০৮ জন চিকিৎসক তৈরি করেছে, যাদের মধ্যে ৫৪৭ জন সেনাবাহিনীতে কর্মরত এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসহ বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালন করছেন।
শিক্ষার মানের দিক থেকেও এএফএমসি দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের অন্যতম। জন্মলগ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকলেও বর্তমানে কলেজটি পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর অধীনে। বাধ্যতামূলক আবাসিক শিক্ষা ব্যবস্থা থাকায় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো হরতাল, অবরোধ বা রাজনৈতিক অস্থিরতায় শিক্ষাক্রম বিঘ্নিত হয় না।
এছাড়া ২০০৫ সাল থেকে নিয়মিতভাবে প্রকাশিত ‘জেএএফএমসি’ শীর্ষক মেডিকেল জার্নালটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং দেশের বাইরে থেকেও চিকিৎসকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
Leave a Reply