দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে অমীমাংসিত থেকে যাওয়া একটি খুনের মামলার রহস্য অবশেষে সমাধান করেছে কর্ণাটক পুলিশ। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কোনানাকালু রিজার্ভ ফরেস্টের মধ্যে এক পুরুষের লাশ পাওয়ার ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত এই মামলা ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে মাঠ পর্যায়ের তদন্ত ও একটি অপ্রত্যাশিত সূত্রের দুটি ডিমের খাঁচার সাহায্যে সমাধান হয়। খবর দিয়েছে গালফ নিউজ।
প্রাথমিকভাবে নিহত ব্যক্তিকে শিবামোগ্গার একজন ব্যবসায়ী মনে করা হলেও পাসবুক ও ফোন নম্বর দিয়ে চিহ্নিত করা তথ্য কার্যকর হয়নি। খুনিরা এসটিডি ফোনবুথ ও ল্যান্ডলাইন ব্যবহার করায় ডিজিটাল ট্রেস পাওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে মামলাটি বছরের পর বছর ধরে ঝুলে ছিল।
২০২৫ সালের ডিসেম্বরে পুলিশ পুরোনো ফাইলটি আবার খোলার পর ছয়টি জেলায় ছড়িয়ে থাকা ফোনবুথের কল রেকর্ড ধরে অনুসন্ধান চালায়। পুরোনো ধাঁচের গোয়েন্দাগিরির মাধ্যমে তদন্তকারীরা প্রতিটি ফোনবুথের নম্বরে খুঁটিনাটি অনুসন্ধান শুরু করেন।
তদন্তে বেঙ্গালুরুর একটি জায়গায় সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড নজরে আসে। একটি দোকান থেকে কেনা দুটি ডিমের খাঁচা পুলিশকে মামলার গুরুত্বপূর্ণ সূত্রে পৌঁছে দেয়। এর মাধ্যমে তারা এক সন্দেহভাজনের নতুন বাড়ির ঠিকানা শনাক্ত করতে সক্ষম হন।
তদন্তে প্রকাশ পায়, নিহত ব্যক্তি একজন লেখক। তিনি ও তার চালক প্রায় ১ মিলিয়ন (১০ লাখ) রুপি নিয়ে ফিরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু ফেরত আসেনি লেখক; অর্থ ছিনতাই করার উদ্দেশ্যেই তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয় এবং লাশ জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়। সন্দেহভাজন ব্যক্তি এবং তার দুই সহযোগী পরে পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
মামলায় যুক্ত এক অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বলেন, “ডিজিটাল প্রমাণ না থাকলেও নিষ্ঠার সঙ্গে পুরোনো ধাঁচের গোয়েন্দাগিরি কতটা কার্যকর হতে পারে, এটি প্রমাণিত হলো।” আদালতের ২০০৫ সালের নথি অনুযায়ী, তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, যদিও একজন ২০১৪ সালে গ্রেপ্তার হন।
এই রহস্যময় মামলার সমাধান দেখিয়েছে, ধৈর্য, সতর্ক তদন্ত এবং অপ্রত্যাশিত সূত্রই প্রাচীন ও জটিল হত্যার তদন্তে কার্যকরী হতে পারে।
Leave a Reply