পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিনে রবিবার নতুন করে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে উপস্থিত হয়ে সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ঘোষণা করেন যে দেশটির সরকার ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তারা নিজেদের পরিচয় দেন ‘মিলিটারি কমিটি ফর রিফাউন্ডেশন’ হিসেবে এবং জানায়, প্রেসিডেন্ট, সরকার ও সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান অপসারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পাসকাল তিগ্রিকে কমিটির প্রধান হিসেবে নিয়োগের কথাও ঘোষণা করা হয়।
ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর ১৯৬০ সাল থেকে বেনিনে একাধিকবার সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছে। তবে ১৯৯১ সালের পর দেশটি তুলনামূলক স্থিতিশীল সময় কাটাচ্ছিল, বিশেষ করে ম্যাথিউ কেরেকুর দীর্ঘ শাসনের পর গণতন্ত্রে ফেরার পর।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট পাত্রিস তালোঁ ২০১৬ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন। আগামী এপ্রিলের নির্বাচনের পর তার বিদায়ের কথা ছিল। নির্বাচনে তার দলের প্রার্থী, সাবেক অর্থমন্ত্রী রোমুয়াল্ড ওয়াদাগনি ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছিলেন। তবে বিরোধী প্রার্থী রেনো আগবদজোর প্রার্থীতা পর্যাপ্ত স্পনসর না থাকার কারণে বাতিল করা হয়েছিল। এদিকে গত মাসে সংসদ প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৭ বছর করেছে, যদিও সর্বোচ্চ দুই মেয়াদের সীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক অভ্যুত্থান বেনিনে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রতিফলন। এটি পশ্চিম আফ্রিকায় সামরিক হস্তক্ষেপের ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঠিক এক সপ্তাহ আগে গিনি-বিসাউতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সাবেক প্রেসিডেন্ট উমারু এমবালোকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। সেখানে বিতর্কিত নির্বাচনের পর সরকার ও বিরোধীপক্ষ উভয়ই নিজেদের জয় দাবি করেছিল।
আঞ্চলিক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বেনিনে সামরিক অভ্যুত্থান দেশটির নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতার ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। দেশটির জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য নজর রাখছে।
Leave a Reply