গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের কাছে ১২ দফা সুপারিশমালা পেশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীতে ‘কর্তৃত্ববাদ পতন-পরবর্তী বাংলাদেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতি’ এবং দুর্নীতিবিষয়ক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার-২০২৫ প্রদান উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এসব সুপারিশমালা তুলে ধরা হয়।
টিআইবির সুপারিশ অনুযায়ী, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সকল সুপারিশ অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করা, সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ প্রণয়ন এবং প্রেস কাউন্সিল বিলুপ্ত করে স্বাধীন জাতীয় গণমাধ্যম কমিশন গঠন করা জরুরি। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সকল গণমাধ্যমকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনসহ জাতীয় বা বাংলাদেশ সম্প্রচার সংস্থা হিসেবে পরিচালনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সুপারিশমালায় আরও বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নিয়মিত বেতন-ভাতা প্রদান ও চাকরির সুরক্ষা দেওয়া, বড় ও মাঝারি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত করা এবং ছোট প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের শেয়ার প্রদানের ব্যবস্থা করা।
ভুয়া ও অপতথ্য সংবাদ মোকাবিলার জন্য প্রতিটি নিউজরুমে কার্যকর পদ্ধতি প্রবর্তন, ফ্যাক্টচেকার নিয়োগ, গুজব বা মিথ্যা সংবাদ প্রচারকারী গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে সতর্কতা, জরিমানা ও প্রয়োজনে বন্ধ করার ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ রাখা হয়েছে। ফটোকার্ডের নির্দিষ্ট মানদণ্ড প্রণয়ন ও প্রতিটি সংবাদের যাচাইযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য কিউআর কোড বা অন্যান্য পরিচয়সূচক চিহ্ন ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
সুপারিশমালায় গণমাধ্যমকে নারী, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সকল প্রকার ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক উসকানি এবং সন্ত্রাসী হামলা থেকে গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুরক্ষা দেওয়া এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করার নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
টিআইবির এ সুপারিশমালা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে এবং সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে জানানো হয়েছে।
Leave a Reply