গত জুনে ১২ দিনের সংঘাতের সময় ইসরায়েলের একটি মোসাদ সাইটে ইরানের পাল্টা হামলায় অন্তত ৩৬ জন নিহত হয়েছিল বলে দাবি করেছেন ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)-এর মুখপাত্র এবং জনসম্পর্কের ডেপুটি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলি মোহাম্মদ নাঈনি। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তিনি মেহের নিউজ এজেন্সিকে এই তথ্য জানান।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈনি বলেন, “ইসরায়েল যখন একটি ইরানি গোয়েন্দা কেন্দ্রে হামলা চালায়, তারই জবাবে ইরান মোসাদের ওই সাইটে অত্যন্ত নির্ভুলভাবে আঘাত হানে, যার ফলস্বরূপ ৩৬ জনের প্রাণহানি হয়।” তিনি এই হামলাকে ইরানের বহুমুখী ‘ট্রু প্রমিজ ৩’ অভিযানের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও দাবি করেন, মোসাদ সাইটের হামলার পাশাপাশি ইরান হাইফার তেল শোধনাগারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল, যা মাত্র পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে দুটি পৃথক আঘাতের মাধ্যমে শোধনাগারকে অকেজো করে দিয়েছিল। নাঈনি জানান, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রসহ তার পুরো বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যবহার করেও ইরানের ২২টি ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র তরঙ্গ আটকাতে ব্যর্থ হয়।
আইআরজিসি মুখপাত্রের দাবি, এই ১২ দিনের সংঘাতে ইসরায়েলের সামরিক ও গোয়েন্দা হতাহতের সংখ্যা ইরানের চেয়ে বেশি হয়েছে। তিনি বলেন, “এই সংঘাত সামরিক বিশ্লেষকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেস স্টাডি; আন্তর্জাতিক থিঙ্ক ট্যাঙ্কগুলো যুদ্ধের আগে ও পরে দুই ভাগে এটি বিশ্লেষণ করছে।”
উল্লেখ্য, ১৩ জুন ইসরায়েল বিনা প্ররোচনায় ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে, যার ফলে ইরানের বহু সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিক নিহত হন। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও তিনটি ইরানি পারমাণবিক কেন্দ্রে বোমা হামলা চালায়। নাঈনি দাবি করেছেন, ২৪ জুন ইরানের টানা পাল্টা প্রতিরোধের মুখে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ বন্ধ করতে বাধ্য হয়।
আইআরজিসি মুখপাত্র বলেন, ইরান চীন বা রাশিয়ার সাহায্য না চেয়েই এই অভিযান সম্পন্ন করেছে। সামরিক চুক্তি না থাকার কারণে তেহরান তাদের কাছে কোনো অনুরোধ করেনি এবং সম্পূর্ণ নিজস্ব সামরিক শক্তিতে সফল হয়েছে।
Leave a Reply