অনিয়ন্ত্রণযোগ্য মশা-বাহিত রোগ ছিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশসহ চারটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশে ভ্রমণকারী আমেরিকান নাগরিকদের জন্য লেভেল ২ ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এই তথ্য জানিয়েছে। খবরের সূত্র: ফক্স নিউজ।
সিডিসি জানিয়েছে, কিউবা, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশে এই সতর্কতা কার্যকর থাকবে। ভ্রমণকারীদের এই অঞ্চলে ভ্রমণের সময় উন্নত সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ছিকুনগুনিয়ার এখনো কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তবে রোগটি টিকা-প্রতিরোধী, তাই আক্রান্ত এলাকায় যাওয়া বা সেখানে থাকা ব্যক্তিদের টিকা নেওয়ার সুপারিশ করা হচ্ছে। রোগের সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ হলো জ্বর এবং জয়েন্টে তীব্র ব্যথা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করেছে যে কিছু রোগীর ক্ষেত্রে সংক্রমণ এতটাই গুরুতর হতে পারে যে অঙ্গহানি ও মৃত্যুর ঝুঁকি দেখা দিতে পারে, যা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন সৃষ্টি করতে পারে। গুরুতর ক্ষেত্রে জয়েন্টের ব্যথা মাস বা বছরের পরেও স্থায়ী হতে পারে।
ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর ২০২৫) বিশ্বব্যাপী ৪ লাখ ৪৫ হাজার ছিকুনগুনিয়া কেস এবং ১৫৫ জন মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। বাংলাদেশেও ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে; ঢাকায় জানুয়ারি-সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৭০০ সন্দেহভাজন কেস রিপোর্ট হয়েছে। এছাড়া চীনের গুয়াংডং প্রদেশে ১৬ হাজার স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত কেস নিশ্চিত হয়েছে, যা দেশটিতে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় প্রাদুর্ভাব।
সিডিসি আরও সতর্ক করেছে, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, ভারত, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডে ভ্রমণরত আমেরিকানরাও ছিকুনগুনিয়া সংক্রমণের বর্ধিত ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন। ভ্রমণকারীদের মশা থেকে সুরক্ষা, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং প্রয়োজনে টিকা নেওয়ার মাধ্যমে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষও প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার নিয়মিত তত্ত্বাবধানে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
Leave a Reply