প্রায় এগারো মাস ধরে আত্মগোপনে থাকা নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ও ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো অবশেষে প্রকাশ্যে দেখা দিলেন। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় ভোরে নরওয়ের অসলো শহরের একটি হোটেলের বারান্দা থেকে সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান তিনি। খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
মাচাদোর জনসম্মুখে শেষ উপস্থিতি ছিল চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি। ওইদিন তিনি ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর তৃতীয় মেয়াদে শপথ গ্রহণের বিরুদ্ধে আয়োজিত এক বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। সেই বিক্ষোভের পর থেকেই তিনি জনসম্মুখ থেকে দূরে ছিলেন।
চলতি বছরের অক্টোবর মাসে নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার পর মাচাদো জানিয়েছিলেন, তিনি সরাসরি অসলোতে পৌঁছে পুরস্কার গ্রহণ করতে চান। তবে মাদুরো সরকার তার বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং সতর্ক করে জানান, দেশত্যাগ করলে তাকে পলাতক ঘোষণা করা হবে। এছাড়া নরওয়েতে পুরস্কার অনুষ্ঠানের প্রেক্ষাপটেই মাদুরো সরকার সেখানে নিজেদের দূতাবাসও বন্ধ করে দেয়।
সরকারি বিধিনিষেধ ও নজরদারি সত্ত্বেও মাচাদো গোপনে ভেনেজুয়েলা ছাড়তে সক্ষম হন। যদিও তিনি বুধবার (১০ ডিসেম্বর) অসলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার বিতরণের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তার অনুপস্থিতিতেই নরওয়েতে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় এবং মাচাদোকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
মাচাদোর এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর নজর আকর্ষণ এবং বিরোধী নেতৃত্বের প্রতীকী শক্তি হিসেবে গণ্য হবে। দীর্ঘ সময়ের আত্মগোপন শেষে প্রকাশ্যে আসা মাচাদোর সমর্থকরা তার সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করেছেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করেছে যে, ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের জন্য রাজনৈতিক চাপ ও বাধা থাকা সত্ত্বেও তারা সত্ত্বাধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসছেন।
Leave a Reply