কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ক্রমাগত বাড়লেও সবচেয়ে বেশি সংকট দেখা দিয়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে। সুপার সপ ও মুদি দোকানগুলোতে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন, যা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ভোক্তাদের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে। এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বেশি দামে খোলা তেল বিক্রি করে বাড়তি মুনাফা লুটছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শহরের সুপার সপ ও পাইকারি দোকানগুলোতে বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ নেই। বাধ্য হয়ে সাধারণ মানুষ বেশি দামে খোলা সয়াবিন কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। বর্তমানে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা বাজারের স্থিতিশীলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, তীর, রূপচাঁদা, ফ্রেশ এবং পুষ্টি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা (এসআর) বোতলজাত তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে শর্তারোপ করছেন। এক কার্টন সয়াবিন নিতে হলে প্যাকেট চাল, আটা বা সরিষার তেল কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।
জিয়া বাজারের মুদি দোকানি আকরাম হোসেন বলেন—“রূপচাঁদার এসআর বলেছে, এক কার্টন তেলের সঙ্গে এক বস্তা চাল নিতে হবে। আমরা নিতে পারিনি, তাই তেলও পাইনি।”
অন্যদিকে, কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা দাবি করছেন, “বোতলজাত তেলের তুলনায় খোলা তেলে দোকানিদের লাভ বেশি, তাই তারা বোতলের তেল খুলে খোলা তেল হিসেবে বিক্রি করছেন।”
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বাজারের এই সংকট নিয়ে তারা অবগত রয়েছে এবং নিয়মিত মনিটরিং চালানো হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন—“বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কেউ মুনাফা লুটতে চাইলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে তিন মাস আগেই মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।”
এদিকে, জেলা প্রশাসন ও টিসিবির পক্ষ থেকে ন্যায্যমূল্যে বিক্রয়ের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবি’র তেল সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তেল কিনতে আসা গ্রাহক আমিনা বেগম বলেন—“বোতলের সয়াবিন নিতে এসেছিলাম, কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে খোলা তেল কিনলাম।”
অপর একজন ক্রেতা আনিছুর রহমান বলেন—“রমজান এলেই বাজারে সংকট তৈরি হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।”
প্রশাসন বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং দাবি করেছে যে দ্রুতই সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। তবে এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Leave a Reply