রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৪ অপরাহ্ন

শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী: জাতীয় নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৩০ মে, ২০২৫, ৮.৪৬ অপরাহ্ণ
  • ১৪২ বার

ডেক্স নিউজ :

আজ ৩০ মে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তমের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সেনাসদস্যের গুলিতে তিনি শহীদ হন। এই ক্ষণজন্মা নেতার মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গভীর শূন্যতা সৃষ্টি করে। দেশি-বিদেশি চক্রান্তের মাঝেও তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী, কর্মঠ, সাহসী এবং প্রজ্ঞাবান রাষ্ট্রনায়ক।

জিয়াউর রহমান শুধু একজন সফল রাষ্ট্রনায়কই নন, তিনি ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা এবং দেশের সংকটে জাতির কাণ্ডারি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ করলে তিনি দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তাঁর সাহসী আহ্বানে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

জাতির ক্রান্তিকালে জিয়াউর রহমান নেতৃত্ব দিয়েছেন সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে। তিনি বিশ্বাস করতেন দেশকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজন সমন্বিত পরিকল্পনা ও জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ১৯ দফা কর্মসূচি, বহুদলীয় গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, সাংবাদিকতা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা- সবই প্রমাণ করে তাঁর রাষ্ট্রনায়কোচিত বিচক্ষণতা ও উদার মানসিকতা।

অর্থনীতি ও উন্নয়নে অবদান
জিয়াউর রহমান দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, গার্মেন্টস শিল্পের সূচনা, মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তি রপ্তানি, নারীর ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণে তিনি ছিলেন পথপ্রদর্শক। তাঁর সময়েই পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, বাপেক্স, চিনিশিল্প পুনরুদ্ধার এবং মাছ রপ্তানিসহ বহুমুখী শিল্প উন্নয়নের সূচনা হয়।

তিনি ছিলেন দেশের বেকার জনগোষ্ঠীকে জনশক্তিতে রূপান্তর করার কৌশলী রূপকার। তাঁর আমলেই সাড়ে আট হাজার কর্মী মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো হয়, যা বর্তমানে পরিণত হয়েছে সোয়া কোটিরও বেশি অভিবাসী শ্রমিকে। বৈদেশিক আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস—রেমিট্যান্স ও গার্মেন্টস শিল্পের ভিত্তি তিনিই স্থাপন করেছিলেন।

নারী ও যুব উন্নয়নে অগ্রণী
তিনি অনুধাবন করেছিলেন, দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া। তাই নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য নিয়েছিলেন কার্যকর উদ্যোগ, গঠন করেছিলেন যুব ও নারী মন্ত্রণালয়। তাঁর হাত ধরেই দেশের ৭০ শতাংশ দরিদ্র নারীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয় গার্মেন্টস খাতে।

রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মযজ্ঞ
জিয়াউর রহমানের হাত ধরে গঠিত হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তাঁর মৃত্যুর পর অনেকে ভেবেছিলেন দলটি টিকবে না। কিন্তু তাঁর সহধর্মিণী, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘ ৯ বছর আপসহীন আন্দোলনের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন—এটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি আদর্শ ও আত্মত্যাগের নাম।

বর্তমানে শহীদ জিয়ার আদর্শকে ধারণ করে তাঁর সুযোগ্য সন্তান ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান “সবার আগে প্রিয় বাংলাদেশ” স্লোগানে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করছেন। তিনি ভবিষ্যতের বাংলাদেশের জন্য এক নতুন স্বপ্ন ও প্রত্যাশার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।

শহীদ জিয়াউর রহমান ছিলেন এমন একজন রাষ্ট্রনায়ক, যিনি কঠিন সময়েও সাহসিকতা, প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা দিয়ে দেশকে পথ দেখিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর পরও দেশের ইতিহাসে তাঁর অবদান অমলিন। আজ তাঁর ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকীতে জাতি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবিস্মরণীয় নেতাকে।

লেখক:
শামসুজ্জামান দুদু
ভাইস চেয়ারম্যান, বিএনপি

Please Share This Post in Your Social Media

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

Footer Widget

Footer Widget

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© 2019, All rights reserved.
Design by Raytahost.com