ইসলামী শিক্ষায় সূর্যাস্তের পর মাগরিব নামাজ পড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসের আলোকে জানা যায়, নবী করীম (সা.) এবং সাহাবায়ে কেরাম মাগরিবের নামাজ ওয়াক্তের শুরুতেই আদায় করতেন। এর মাধ্যমে নামাজে সময়োপযোগী ও নিয়মিততা বজায় রাখার শিক্ষা দেয়া হয়েছে।
সহিহ বুখারিতে বর্ণিত আছে, সালামা (রা.) বলেন, “আমরা নবী করীম (সা.)-এর সঙ্গে মাগরিব পড়তাম যখন সূর্য অস্ত যেত।” (হাদিস: ৫৬১) এছাড়া সহিহ মুসলিমে রাফে ইবনে খাদীজ (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে মাগরিবের নামাজ আদায় করতাম এবং নামাজ শেষের পরও আলো থাকত, যা প্রমাণ করে মাগরিব ওয়াক্তের শুরুতেই নামাজ পড়া হয়েছিল। (হাদিস: ৬৩৭)
হাদিস ভাষ্যকার আল্লামা আইনী (রহ.) উল্লেখ করেছেন, এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, নবী (সা.) এমনভাবে নামাজ আদায় করতেন যে সূর্যাস্তের পরও চারপাশ আলোকিত থাকত। হাফেজ ইবনে হাজার (রহ.) বলেন, মাগরিব নামাজ ওয়াক্তের শুরুতেই পড়া উত্তম, যেন নামাজ শেষের সময়ও যথেষ্ট আলো থাকে।
ফকীহদের মতে, মাগরিব নামাজ ওয়াক্তের শুরুতে পড়া মুস্তাহাব। তবে সূর্যাস্তের পর নামাজের প্রস্তুতি নিতে সামান্য সময় নেওয়া গ্রহণযোগ্য, যা বিলম্ব হিসেবে গণ্য হবে না। হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রহ.) বলেন, দশ মিনিট পর্যন্ত বিলম্ব করলে তা মাকরূহ হবে না।
তবে এর চেয়ে বেশি সময় বিলম্ব করলে তা মাকরূহ তানযীহী হিসেবে গণ্য হবে। আর যদি নামাজ এত বিলম্ব করা হয় যে আকাশের তারকাগুলো প্রকাশ পায়, তবে তা মাকরূহ তাহরীমী। ফলে, ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে, মাগরিব নামাজের আদায়ের সময়োপযোগীতা অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে এবং তা মুসলমানদের জন্য নৈতিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত।
Leave a Reply