দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রবল বন্যা ও ভূমিধসের কারণে নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ৮০১ জন ছাড়িয়েছে, যা এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। এখনও শত শত মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কায় তীব্র বর্ষণের কারণে পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে।
উদ্ধারকারী দল ও স্বেচ্ছাসেবীরা বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষাধিক মানুষকে সাহায্য করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড।
ইন্দোনেশিয়ায় এখন পর্যন্ত ৯১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে এবং ২৭৪ জন এখনও নিখোঁজ। সুমাত্রার আচেহ প্রদেশে আট লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। শ্রীলঙ্কায় ৬০৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে এবং ২১৪ জন নিখোঁজ। দেশটির প্রেসিডেন্ট কুমারা দেশনায়ক এই ঘটনাকে “ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এছাড়া থাইল্যান্ডে অন্তত ২৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, আর মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামে দুইজন করে মারা গেছেন।
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে বন্যা ও ভূমিধসের পরও বেঁচে থাকা মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। আচেহ প্রদেশের আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করেছে, শনিবার (৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত এই অঞ্চলে ‘অত্যন্ত ভারি বৃষ্টি’ হতে পারে।
আচেহ প্রদেশের তামিয়াং জেলার বাসিন্দারা জানান, বন্যার কারণে তারা খাবার, পানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকটে ভুগছেন। বিশেষ করে প্রত্যন্ত এলাকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে সেখানকার মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। আচেহ গভর্নর মুজাকির মানাফ জানিয়েছেন, উদ্ধারকর্মীরা এখনও মৃতদেহ খুঁজছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এই মুহূর্তে দারিদ্র্য ও খাদ্যসংকটই সবচেয়ে বড় মানবিক হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুধু প্রাণহানি ঘটাচ্ছে না, বরং বেঁচে থাকা মানুষদের খাদ্য, আশ্রয় ও নিরাপদ পানি সরবরাহে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
Leave a Reply