নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে মাঠ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রোববার (১২ অক্টোবর) আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে উপদেষ্টা জানান, নির্বাচনকালীন শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে সব সংস্থার সমন্বয়ে একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “যে কোনো বিশৃঙ্খলাকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওসিদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
উপদেষ্টা আরও জানান, নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক বডি ওর্ন ক্যামেরা সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, “পূর্ববর্তী নির্বাচনগুলোতে দায়িত্ব পালনকারী কিছু কর্মকর্তাকে এবার দায়িত্ব প্রদান থেকে বিরত রাখা হবে, যাতে নিরপেক্ষতার বিষয়ে কোনো প্রশ্ন না ওঠে।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, আসন্ন নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ২৮টি ব্যাচে তিনদিন মেয়াদি এই প্রশিক্ষণ ১৩০টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে প্রথম ব্যাচের (৬,৫০০ জন) প্রশিক্ষণ সম্পন্ন এবং দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ চলমান। সব ব্যাচের প্রশিক্ষণ আগামী ১৫ জানুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যে শেষ হবে।
আনসার-ভিডিপি সদস্যদের জন্যও ‘প্রাক-নির্বাচনী প্রশিক্ষণ’ শুরু হয়েছে। এতে প্রতি কেন্দ্রে ১৩ জন করে মোট ৫ লাখ ৮৫ হাজার সদস্য অংশ নেবেন। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার অস্ত্রসহ এবং ৪ লাখ ৫০ হাজার নিরস্ত্র আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আনসার ব্যাটালিয়নের ৩,১৫৭ জন রিক্রুট সিপাহিকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
সভায় জানানো হয়, এবারের নির্বাচনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ৩৩ হাজার সদস্য (১,১০০ প্লাটুন) নিয়োজিত থাকবে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ সদস্য ইতোমধ্যে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন, যা ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। এ ছাড়া নির্বাচনের সময় প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে, যাতে যে কোনো পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনী সীমানা পুনর্নির্ধারণকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না ঘটে, সে বিষয়ে বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি টহল বৃদ্ধি ও গোয়েন্দা নজরদারিও আরও তৎপর করা হচ্ছে।
Leave a Reply